প্রেম-বন্ধুত্ব কোনো স্বার্থনিরপেক্ষ চিরস্থায়ী বিষয় নয়। তা সে বন্ধুত্ব নর-নারীর মধ্যেই হোক বা এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের হোক বা জনগণের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের হোক। বন্ধুত্ব বিষয়টিই এ রকম যে—যদি তুমি আমার সঙ্গে থাকো তো তোমাকে আমি আমার কোলে তুলে নেব। যদি না থাকো, বিরুদ্ধে যাও অথবা এর-ওর সঙ্গে মাখামাখি করো, তাহলে তোমার সবগুলো দাঁত তুলে নেব।
এ ব্যাপারে একেবারে ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পোল্যান্ডের এক নারী গত হপ্তায়। তাঁর বাড়তি সুবিধা ছিল এই যে তিনি একজন দাঁতের ডাক্তার। অর্থাৎ প্রতারক বন্ধুকে শায়েস্তা করার অস্ত্র—দাঁত তোলার অস্ত্রপাতি—তাঁর নিজেরই ছিল। অন্য কোনো ডেন্টিস্টকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে নিয়োগ করতে হয়নি।
বাঙালি রেগে গেলে বলে, ‘এক থাপ্পড়ে তোর বত্রিশ পাটি দাঁত ফেলে দেব।’ পোল্যান্ডের প্রেমিকা থাপড় দিয়ে ফেলেননি, প্রেমিককে অজ্ঞান করে যন্ত্র দিয়ে টেনে তুলেছেন তাঁর ৩২টি দাঁত।
দন্ত চিকিৎসক আন্না বন্ধুত্ব বা ভালোবাসাবাসি করেছিলেন ওলসেঙ্কির সঙ্গে। তলে তলে ওলসেঙ্কি আরেক নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান। সেটা টের পান আন্না। এর মধ্যে দাঁতের সমস্যা নিয়ে আন্নার চেম্বারেই যান ওলসেঙ্কি। আন্না মনে মনে বলেন, এবার পেয়েছি তোমাকে। আরেক মেয়ের সঙ্গে ঢলাঢলি করার মজা দেখাচ্ছি। বললেন, শুয়ে পড়ো চেয়ারে। টোকাটুকি করে দাঁত পরীক্ষা করতে করতেই প্রয়োগ করেন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চেতনানাশক ইনজেকশন। তারপর তিনি নির্বিঘ্নে বন্ধুর ৩২টি দাঁতই তুলে ফেলেন।
ঘোর কাটার পর ওলসেঙ্কি বুঝতে পারেন, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। মুখের ভেতরটা খালি খালি লাগে। ওপরে ব্যান্ডেজ। তাকে সন্দেহ করার প্রশ্নই আসে না। সে ভালো ডাক্তার। কিন্তু হায় আল্লাহ, সে এমন নিষ্ঠুরতা করতে পারল!
ব্যাপারটা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অপরাধ প্রমাণিত হয়। আন্না আদালতের কাঠগড়ায় বলেন, জানি কাজটি ঠিক হয়নি। কিন্তু লোকটা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই নিজেকে সামাল দিতে পারিনি। সবগুলো দাঁত তুলে ফেলেছি। এবার নতুন বন্ধুর সঙ্গে দাঁত কেলিয়ে হাসাহসি করুক।
দাঁত তোলা ডাক্তারনীর তিন বছরের জেল হয়েছে। কিন্তু ট্র্যাজেডি হলো, ওলসেঙ্কির নতুন মেয়েবন্ধুটিও তাকে ছেড়ে পালিয়েছে। দাঁতও গেল, নতুন বন্ধুও গেল। খবরটি ডেইলি মেইল-এর।
প্রতারণা এমন এক প্রবৃত্তি যা থেকে প্রতিহিংসার জন্ম। প্রতিহিংসায় কোনো পক্ষই লাভবান হয় না। ব্যক্তিগত জীবনেও নয়, রাজনীতিতেও নয়।
কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে তা হিসাব করে করা ভালো। বিচার-বিবেচনা করে সততার সঙ্গে করা ভালো। স্বার্থের জন্য বন্ধুত্বের অভিনয় করলে তার পরিণাম শুভ হয় না। তা সাধারণ নর-নারীর জন্য যেমন প্রযোজ্য, রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও। বন্ধুত্বের নামে, পার্টনারশিপ বা অংশীদারির নামে এক বন্ধু যদি অপর বন্ধুর পনের আনা সম্পদের অংশের ভাগ চায় এবং তা না দিলেই দন্ত উৎপাটন করে, তা কোনো বন্ধুত্ব নয়।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা স্বার্থের কারণে কখনো একজন নিজেকে উজাড় করে দিতে পারে। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের মালিকানা যৌথভাবে জনগণের। বন্ধুত্বের নামে, ব্যক্তিস্বার্থে অর্থাৎ ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সবকিছু উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা হলে জনগণ মনে করে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বহু দেশ আমেরিকা ও পশ্চিমী পুঁজিবাদী দেশগুলোর সহায়তায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। একপর্যায়ে কোনো কোনো দেশের নেতা সোভিয়েত ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকে পড়েন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে। তা ছিল প্রতারণা। আফ্রিকার অনেক দেশে এমন হয়েছে। আমাদের অঞ্চলেও ঘটেছে।
রাজনীতি এক ভয়ংকর খেলা। নেতাদের উচিত সবার সঙ্গেই খুব সাবধানে প্রেম ও পার্টনারশিপ করা। প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা না থাকলে সবগুলো দাঁত রক্ষা করা কঠিন।
গণতন্ত্র একধরনের বন্ধুত্ব। জনগণের সঙ্গে জনপ্রিয় নেতাদের বন্ধুত্ব। তা নর-নারীর প্রণয়ের মতোই আবেগী ব্যাপার। প্রেমিকের সব দাঁত তুলে ফেলা মানে তার মুখের সৌন্দর্য হারানো। রাজনীতিতে নেতাদের দাঁত তোলা মানে ক্ষমতা হারানো। যদি স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে তাহলে দাঁত তোলার কাজটা তারা করে ভোটের সময়। যদি সে সুযোগ না থাকে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন না করা যায়, তাহলে আরব বসন্ত। স্বৈরাচারী শাসকের দাঁত ওভাবেই জনগণ তোলে।
জনগণ যদি দেখে তাদের বন্ধু তাদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অন্যের সঙ্গে মাখামাখি করছে, তখন তারা মনে করে তারা প্রতারিত হয়েছে। ফলে জনগণ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়। তারা নেতাদের সব দাঁত তুলে ফেলতে দ্বিধা করে না।
ব্যক্তিগত জীবনে ও রাজনীতিতে সবচেয়ে নিরাপদ ও উত্তম পন্থা হলো কারও সঙ্গেই অতিরিক্ত প্রেমে জড়িয়ে না পড়া এবং প্রতারণা না করা। বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গেও নয়, দেশের বন্ধু অর্থাৎ জনগণের সঙ্গেও নয়। প্রতারণার পরিণাম পাঁচ-সাতটি নয়—সবগুলো দাঁত খোয়ানো।
এ ব্যাপারে একেবারে ব্যবহারিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পোল্যান্ডের এক নারী গত হপ্তায়। তাঁর বাড়তি সুবিধা ছিল এই যে তিনি একজন দাঁতের ডাক্তার। অর্থাৎ প্রতারক বন্ধুকে শায়েস্তা করার অস্ত্র—দাঁত তোলার অস্ত্রপাতি—তাঁর নিজেরই ছিল। অন্য কোনো ডেন্টিস্টকে অতিরিক্ত ফি দিয়ে নিয়োগ করতে হয়নি।
বাঙালি রেগে গেলে বলে, ‘এক থাপ্পড়ে তোর বত্রিশ পাটি দাঁত ফেলে দেব।’ পোল্যান্ডের প্রেমিকা থাপড় দিয়ে ফেলেননি, প্রেমিককে অজ্ঞান করে যন্ত্র দিয়ে টেনে তুলেছেন তাঁর ৩২টি দাঁত।
দন্ত চিকিৎসক আন্না বন্ধুত্ব বা ভালোবাসাবাসি করেছিলেন ওলসেঙ্কির সঙ্গে। তলে তলে ওলসেঙ্কি আরেক নারীর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতান। সেটা টের পান আন্না। এর মধ্যে দাঁতের সমস্যা নিয়ে আন্নার চেম্বারেই যান ওলসেঙ্কি। আন্না মনে মনে বলেন, এবার পেয়েছি তোমাকে। আরেক মেয়ের সঙ্গে ঢলাঢলি করার মজা দেখাচ্ছি। বললেন, শুয়ে পড়ো চেয়ারে। টোকাটুকি করে দাঁত পরীক্ষা করতে করতেই প্রয়োগ করেন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন চেতনানাশক ইনজেকশন। তারপর তিনি নির্বিঘ্নে বন্ধুর ৩২টি দাঁতই তুলে ফেলেন।
ঘোর কাটার পর ওলসেঙ্কি বুঝতে পারেন, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। মুখের ভেতরটা খালি খালি লাগে। ওপরে ব্যান্ডেজ। তাকে সন্দেহ করার প্রশ্নই আসে না। সে ভালো ডাক্তার। কিন্তু হায় আল্লাহ, সে এমন নিষ্ঠুরতা করতে পারল!
ব্যাপারটা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অপরাধ প্রমাণিত হয়। আন্না আদালতের কাঠগড়ায় বলেন, জানি কাজটি ঠিক হয়নি। কিন্তু লোকটা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাই নিজেকে সামাল দিতে পারিনি। সবগুলো দাঁত তুলে ফেলেছি। এবার নতুন বন্ধুর সঙ্গে দাঁত কেলিয়ে হাসাহসি করুক।
দাঁত তোলা ডাক্তারনীর তিন বছরের জেল হয়েছে। কিন্তু ট্র্যাজেডি হলো, ওলসেঙ্কির নতুন মেয়েবন্ধুটিও তাকে ছেড়ে পালিয়েছে। দাঁতও গেল, নতুন বন্ধুও গেল। খবরটি ডেইলি মেইল-এর।
প্রতারণা এমন এক প্রবৃত্তি যা থেকে প্রতিহিংসার জন্ম। প্রতিহিংসায় কোনো পক্ষই লাভবান হয় না। ব্যক্তিগত জীবনেও নয়, রাজনীতিতেও নয়।
কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করলে তা হিসাব করে করা ভালো। বিচার-বিবেচনা করে সততার সঙ্গে করা ভালো। স্বার্থের জন্য বন্ধুত্বের অভিনয় করলে তার পরিণাম শুভ হয় না। তা সাধারণ নর-নারীর জন্য যেমন প্রযোজ্য, রাজনীতিকদের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রযোজ্য। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও। বন্ধুত্বের নামে, পার্টনারশিপ বা অংশীদারির নামে এক বন্ধু যদি অপর বন্ধুর পনের আনা সম্পদের অংশের ভাগ চায় এবং তা না দিলেই দন্ত উৎপাটন করে, তা কোনো বন্ধুত্ব নয়।
ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা স্বার্থের কারণে কখনো একজন নিজেকে উজাড় করে দিতে পারে। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের মালিকানা যৌথভাবে জনগণের। বন্ধুত্বের নামে, ব্যক্তিস্বার্থে অর্থাৎ ক্ষমতায় টিকে থাকার লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সবকিছু উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা হলে জনগণ মনে করে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর বহু দেশ আমেরিকা ও পশ্চিমী পুঁজিবাদী দেশগুলোর সহায়তায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। একপর্যায়ে কোনো কোনো দেশের নেতা সোভিয়েত ইউনিয়নের দিকে ঝুঁকে পড়েন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে। তা ছিল প্রতারণা। আফ্রিকার অনেক দেশে এমন হয়েছে। আমাদের অঞ্চলেও ঘটেছে।
রাজনীতি এক ভয়ংকর খেলা। নেতাদের উচিত সবার সঙ্গেই খুব সাবধানে প্রেম ও পার্টনারশিপ করা। প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা না থাকলে সবগুলো দাঁত রক্ষা করা কঠিন।
গণতন্ত্র একধরনের বন্ধুত্ব। জনগণের সঙ্গে জনপ্রিয় নেতাদের বন্ধুত্ব। তা নর-নারীর প্রণয়ের মতোই আবেগী ব্যাপার। প্রেমিকের সব দাঁত তুলে ফেলা মানে তার মুখের সৌন্দর্য হারানো। রাজনীতিতে নেতাদের দাঁত তোলা মানে ক্ষমতা হারানো। যদি স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে তাহলে দাঁত তোলার কাজটা তারা করে ভোটের সময়। যদি সে সুযোগ না থাকে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন না করা যায়, তাহলে আরব বসন্ত। স্বৈরাচারী শাসকের দাঁত ওভাবেই জনগণ তোলে।
জনগণ যদি দেখে তাদের বন্ধু তাদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে অন্যের সঙ্গে মাখামাখি করছে, তখন তারা মনে করে তারা প্রতারিত হয়েছে। ফলে জনগণ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়। তারা নেতাদের সব দাঁত তুলে ফেলতে দ্বিধা করে না।
ব্যক্তিগত জীবনে ও রাজনীতিতে সবচেয়ে নিরাপদ ও উত্তম পন্থা হলো কারও সঙ্গেই অতিরিক্ত প্রেমে জড়িয়ে না পড়া এবং প্রতারণা না করা। বিদেশি বন্ধুদের সঙ্গেও নয়, দেশের বন্ধু অর্থাৎ জনগণের সঙ্গেও নয়। প্রতারণার পরিণাম পাঁচ-সাতটি নয়—সবগুলো দাঁত খোয়ানো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন